সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ‘মারধর ও হয়রানির’ তিনটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় হেনস্তা শিকাররা নারী নন; এরা তৃতীয় লিঙ্গের। এ ঘটনাটি বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হওয়ার শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা মেলা যুবকটিকে আটক করেছিল।
এব্যাপারে শনিবার দুপুরে তৃতীয় লিঙ্গের হেনস্তা শিকার প্রিয়া মনি বাদি হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেছে। মামলার বাদি প্রিয়া মনি ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে পুলিশের উপস্থিতিতে আটক যুবকের কাছে মুঠোফোন প্রেরণ দেয়ার আকুতি জানিয়েছিলেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মছিউর রহমান জানান, আটক যুবক সহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে দায়ের করা এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে। আটক যুবককে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
শুক্রবার রাতে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কস্থ ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে অভিযুক্ত যুবকটিকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছিলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ।
আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২৩) একই এলাকার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সাথে ওই এলাকায় থাকেন। তাদের আদি বাড়ী চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চুনতি এলাকায়।
তিনি ভূক্তভোগীদের বিরুদ্ধে সৈকতের উন্মুক্ত পরিবেশে বেহায়াপনা আচরণের জন্য এমন অবস্থানের কথা ভিডিও ফুটেজে বলতে শোনা গেছে। তার ফেইসবুক আইডিতে এর আগে বুধবার ( ১১ সেপ্টেম্বর ) শহরের লালদিঘীর পাড় এলাকায় ভাসমান যৌন কর্মিদের লাঠি নিয়ে তাড়িয়ে মারধর করার একটি ফুটেজ আপলোড করেছেন।
ডিবির পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ বলেন, সৈকতে মারধর ও নির্যাতনের কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশ ফুটেজগুলোতে দেখা মেলা যুবকটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। শুক্রবার রাতে শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় সদর থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে।
কক্সবাজার জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানিয়েছেন, হেনস্তা শিকারের ভিডিও ৩ টি তিনি দেখেছেন। এরপর খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছেন ছাত্র সমন্বয় পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী সৈকতে ভ্রমনে আসেন গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে। এসময় তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এটি আইনগত অপরাধ।
ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এদিকে পুলিশের অভিযানে আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন বলে দাবি করেছেন কক্সবাজারের স্থানীয় সমন্বয়কেরা।
তবে আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা মত ও পথের ছাত্র-জনতার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের তথ্য দিয়ে নেতৃত্ব পর্যায়ের স্থানীয় সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “ আটক যুবক জেলার সমন্বয়ক বা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন। আন্দোলনে যেহেতু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণী-পেশা, মত ও পথের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল; আটক যুবকেরও অংশগ্রহণ থাকতে পারে। তাই বলে তিনি সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। “
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারি কেউ যদি স্ব-উদ্যোগে বা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ছাড়া কোন কর্মসূচী নিয়ে থাকে সেটার জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দায়বদ্ধ নয় মন্তব্য করে স্থানীয় এ সমন্বয়ক বলেছেন, “ ব্যক্তির দায়ভার সংগঠন নেবে না। ব্যক্তির কর্ম-অপকর্ম ব্যক্তিকেই জবাবদীহি করতে হবে। “
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply